প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস

সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলাধীন খাষকাউলিয়া দক্ষিণ জোতপাড়া একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এখানে অনেক আগে থেকেই জ্ঞানী ও বিত্তশালী লোকের বসসাব ছিল। যাহাদের মধ্যে ছিল মাঠে জমি জায়গা,ফসল ফলানো ও নিজ নিজ পারিবারিক উন্নয়নের চিন্তাধারা। কিন্তু শিক্ষাপ্রসারে শিক্ষানুরাগী  তেমন কোন ব্যক্তি না থাকায় কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। ঐ সময়ে অল্প কিছু লোক সরকারি চাকুরী জীবি ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাহাদের মধ্যে ছিলেন অত্র গ্রামের শিক্ষা বান্ধব চিন্তাশীল মোঃ আজমত উল্লাহ মাষ্টার সাহেব যাহার উদ্যোগেই এই গ্রামে সর্বপ্রথম ৪৯ নং কে কে পশ্চিম জোতপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। সময়ের ব্যাবধানে অত্র উপজেলার অত্যান্ত পরিচিত মুখ জনাব মোঃ ফারুক রেজা সাহেব ১৯৮৫ সালে চৌহালী  উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অত্র এলাকায় আগমন করিলে জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে ৪০ হাত লম্বা একটি টিনের ঘর বরাদ্দ দেন যাহা কুঠির শিল্প হিসাবে চলতে থাকে যেখানে কিছু নারী পুরুষ বাশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিষ তৈরি করে। কিন্তু  এই  ঘরটি বেশী দিন স্থায়ী হয় না। ফলে উল্লেখিত ঘরটি কয়েক মাস অব্যবহৃত অবস্থায় পরে থাকে। এই পরিস্থিতিতে পূর্বে উল্লেখিত ব্যক্তি বীরমুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আজমত উল্লাহ মাষ্টার সাহেব উক্ত ঘরটিকে অত্র এলাকায় শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রূপান্তরের কথা ভাবেন। যেমন ভবনা তেমনি কাজ তড়িৎ গতিতে তিনি অত্র এলাকার সুনামধন্য ব্যক্তি তৎকালীন বৃহৎ মিরকুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ নওজেশ আলী মোল্লা, , আঃ হাকিম মোল্লা ওরফে লেদু মোল্লা, মোঃ আঃ রাজ্জাক মুহুরী, মোঃ হায়দার আলী মোল্লা, মোঃ আঃ ছাত্তার নায়েব,   প্রিন্সিপাল মোঃ শহিদুর রহমান গোলজার, প্রফেসর মোঃ সাহাব উদ্দিন, আব্দুর রহমান মোল্লা সহ আরো অনেকের সাথে এ বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেন। তারা সকলেই এ বিষয়ে অত্যান্ত আগ্রহ প্রকাশ করিলে উক্ত চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে ১৯৮৮ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে উল্লেখিত কুঠির শিল্প ঘরে বিশাল মিটিং আয়োজন করা হয়। ঐ মিটিংয়েই ব্যাপক আলেচনা অন্তে জনাব আজমত উল্লাহ মাষ্টার সাহেব প্রস্তাবিত বিদ্যালয়টির নাম জনতা উচ্চ বিদ্যালয় রাখার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবটি মোঃ আঃ হাকিম লেদু মোল্লার সমর্থনে গৃহীত হয়। কয়েক দিন সময়ের ব্যবধানে সরকারি নীতিমালা অনুসারে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি নিন্মরূপ: ১। মোঃ নওজেশ আলী মোল্লা, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ২। মোঃ আজমত উল্লাহ মাষ্টার, প্রতিষ্ঠাতা, ৩। অধ্যক্ষ মোঃ শহিদুর রহমান গোলজার, বিদুৎসাহী ৪। প্রফেসর মোঃ শাহাব উদ্দিন, সদস্য ৫। মোঃ আব্দুল সালাম কুটি, দাতা ৬। আলহাজ্ব ডা: আবুল হোসেন, সদস্য ৭। মোঃ সুলতান মাষ্টার, সদস্য সহ আরো কয়েকজন সদস্য ও কিছু সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে  ০১/০১/১৯৮৯ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। জোতপাড়া নিবাসী  মোঃ ফজলুল হক মাষ্টার সাহেবের জেষ্ঠ্য পূত্র মোঃ আব্দুর রাজ্জাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে কয়েক মাস চলতে থাকে কিন্তু রাজ্জাক সাহেবেরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে চাকুরী হওয়ায় তিনি  দায়িত্ব ছেড়ে দিলে খাষপুখুরিয়া নিবাসী মোঃ রাজ্জাক শিকদার সাহেবকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং এম এ হামিদ মিয়াকে সহ প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ সহ আরো কয়েক জনকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের কাজ চলতে থাকে।  দীর্ঘ  ০৪ বছর পর বিদ্যালয়টির MPO ভূক্ত না হওয়ায় কিছু সংখ্যক শিক্ষক বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যায়। পরে ১৯৯১ সালের শেষের দিকে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী খ্যাতিমান পুরুষ মোঃ আনছার আলী ছিদ্দিকীর প্রচেষ্টায় ও এম এ হামিদ মিয়ার চেষ্টায় পূর্ণাঙ্গ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে ০১/০১/১৯৯৩ সালে MPO ভূক্তি হয়। এভাবে বিদ্যালয়টি সরকারি নীতিমালা অনুয়ায়ী চলতে থাকে। পরে ২০০৭ সালে আব্দুর রাজ্জাক সাহেব অবসরে গেলে হামিদ সাহেব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পান এবং তার হাতে অত্র গ্রামের তরুণ, অভিজ্ঞ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তিনি প্রায় ০৪ বছর সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন কালে ইন্তেকাল করেন । এস সময় সহকারি শিক্ষক আব্দুল কাদের কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পান ।  কয়েক মাসের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ নওজেশ আলী মোল্লা সাহেবও ইন্তেকাল করেন।  পরবর্তীতে তাহার পূত্র মোঃ আবুল কালাম আজাদ সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করেন। তাহার দায়িত্ব চলা কালে অত্র এলাকার সন্তান মোঃ ফজলুল হক, ইতিহাস লেখক প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ০১/১১/২০১৭ ইং তারিখ থেকে অন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসিতেছে বর্তমানে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক। বর্তমানে বিদ্যালয়টির ১৫ জন শিক্ষক কর্মচারীর সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে।